লাশকথা

লাশকথা



"আমার মৃত্যুর সংবাদ পেলে মার
কষ্ট হবে খুব। জানি। টের পাই। তাই
যদি সরকারি চিঠি আমার মৃত্যুর
সংবাদ নিয়ে আসে তোমাদের কাছে, মাকে
জানিও না'। অগ্রজের কাছে এই পত্র
লিখেছিল যে যুবক বড়জোর ছ মাস পরেই
তার মৃতদেহ ভেসে উঠলো গলীপ্রান্তে, পুকুরের
পানাঢাকা জলে। তার আগে পরে
আরোও অনেক মৃতদেহ ভেসে
উঠেছিল অথবা ওঠেনি।  কাটামুন্ডু নিয়ে
সরকারের রথ চলে গেছে । হয়তো স্বর্গে গেছে
অথবা নরকে । ফেলে রেখে গেছে মাঠে
লাশ, মুন্ডহীন। ভোরবেলা হাওয়া খেতে গিয়ে
ওই লাশে ধাক্কা খেয়ে পর্দার মহান নায়ক
আঁতকে উঠেছে তবে কার লাশ জানতে পারেনি। খবরকাগজে হইচই তবু
অথচ বেচারা নায়ক, আহা, জানেনা কিছুই। পরে
আরেকজন নাটুকের আছে শুনেছিল আর তারপর
 নায়ক এ বঙ্গ ছেড়ে দীর্ঘকাল বোম্বে বাসা নিলো।
এইসব লাশেদের  কথা ভুলে গেছো? হয়তো ভুলোনি। তবে
ময়নাতদন্ত নিয়ে মাথা ঘামিয়েছো? শুধু লাশদের নয়
তাদের রক্তের? যাতে  মিশে আছে ইতিহাস, নেতাদের
ভুলভ্রান্তি, অহং আর একের
অনেক হয়েওঠা? ওঠার প্রবল ইচ্ছা? স্পর্ধা, দুঃসাহস?
সেইসব লাশ নিয়ে আজ
 কাটাকুটি বড় প্রয়োজন কেননা অদ্য সেই
চিঠিপত্র, প্রমাণ ও দলিল
মুছে দিচ্ছে, ইঁটের দেওয়াল থেকে নয়,
মগজের কোষ থেকে যারা, তারা রাম, তারা
রামসেনা। ভাড়াকরা। পথে পথে যেতে যেতে
একের বৌকে তুলে অন্যের বিছানায় দিয়ে
এদের কিনেছে রাম ট্রাফিকিং মাফিয়াদয়ায়
কম দামে। আজ তারা মুছে দিচ্ছে,
ইঁটের দেওয়াল থেকে নয়, মগজের কোষ থেকে
রাবণের নাম, রাজ্য, লঙ্কাপুরী। যেন
কোনোদিন ছিলই না মেঘনাদ, অন্য অন্য
স্বেচ্ছাসৈনিক।
#
রথী ছিলে, প্রকৃতই। তবে মহারথী
 সাজতে তোমাদের সাধ ছিল। সাধ্য
ছিলনা। তাই ভেসে গেলো লাশগুলি আর
তোমরাও লাশই হলে, হায়, যুদ্ধ বাঁধার আগে। আজ
যুদ্ধ বাঁধতে যাচ্ছে তবু কই সেই মেঘনাদ, যারা চিঠি লিখে বলেছিল
আমার মৃত্যুর সংবাদ পেলে মার
কষ্ট হবে খুব। জানি। টের পাই। তাই
যদি সরকারি চিঠি আমার মৃত্যুর
সংবাদ নিয়ে আসে তোমাদের কাছে, মাকে
জানিও না'। অগ্রজের কাছে?
তবু রথী ছিলে বলে তোমাদের ভুল, ত্রুটি গুলি
 আমরা করেছি ক্ষমা।  করিনি কি?  করেছি কেননা 
যুদ্ধ মাঠপথে সহযাত্রী ছিলে। ঠিক। মহারথী না হলেও  ছায়া দিয়েছিলে। তাই
 গঞ্জনা করিনা।  শুধু ভাবি সততা  আরেকটু যদি থাকতো, হে, যদি সময়ে ঘোষণা করতে পারতে নিজেদের ত্রুটি, ভুল গুলি 
গলি গলি হয়তো তাহলে এতগুলি লাশে ভর্তি হতোনা।  এতগুলি খানাখন্দ কবন্ধে ভরতোনা আর তোমাদেরো কাটামুন্ডু হতে হতোনা
প্রকৃত যুদ্ধ বাঁধার আগেই। তাই 
হে গত রথীরা, তোমাদের অস্বীকার করে আমাদের ট্রেন ধরতে যেতে হবে পরের স্টেশনে। ভিন্ন পথে যেতে হবে অন্য স্টেশনে।  তোমাদের রেলপথ জুড়ে বহু লাশ,  বহু রক্ত অনর্থক আজো লেগে আছে।
#
 কেউ ভয় পায়। বলে " এরকম হলে আমাদেরও চলে যেতে হবে নাকি
অচিরেই, এই দেশ ছেড়ে "? আমি জানি 
এই দেশ ছেড়ে যেতে হবে বা হবে না 
সকলই নির্ভর করে ' যাব কি যাব না " এও
কাঁটাতার মগজসীমার,মাঝখানে, কোথায় দাঁড়াবে তুমি আর 
হাতে হাত রাখবে কিভাবে। কিভাবে বলবে কথা 
কোন কায়দায় জ্বালাবে হাতের  ন কিংবা সিগারেট। ধোঁয়া
 কার মুখে গোল গোল ছড়াবে?  আকাশে
তাকাবে কি তাকাবে না। কিভাবে তোমার হাতে 
ধরা থাকবে কোন অস্ত্র, কোন গ্রন্থ অথবা অক্ষর। এই সব থেকে তারা চেষ্টা নেয় চুপে বুঝে নিতে
  তাদের বিরাট সৈন্য, লোকবল,  অর্থবল, অন্ডাশয় ও হত্যাবল সমস্ত সত্ত্বেও 
আমরা ক্রমে ভয় করতে ভুলে যাচ্ছি কিনা তাদের প্রতিভা।
যদি ভয় নাই করি তবে কিভাবে শূন্যের মধ্য থেকে
তারা পারবে তুলে আনতে হিরা মুক্তা, সোসাল মিডিয়া? 
কিভাবে  বানাবে নতুন রকেট আর 
উড়ে যাবে চাঁদ থেকে মঙ্গল, ইউরেনাস, নেপচুন বা প্লুটো পার হয়ে? আমরা তাদের শনিগ্রহ।
এসো আমরা মেনে নেই আমরা তাদের শনিগ্রহ। মেনে নিই আমাদের ঘিরে আছে প্রকৃতই
তিনটি বলয়। আমরা দেখি না তবু তারা দেখে আর 
তারা দেখে তাই আমাদের দিকে লক্ষ্য রাখে হায়নার মতন ছিঁড়ে, টুকরো করে
খাবে বলে প্রথম পিকনিকে।
 তারপরও পিকনিকের নেশা, লোভ বনভোজনের
 শেষ হবে কারো?  পরবর্তী সেই পিকনিকে খাবে না মাংস,মদ, চরণ অমৃত?
 তোমরা যারা প্রস্তুতি নিয়েছো মনে মনে তাদের সঙ্গে দলে যোগ দিতে আর
 আশায় আশায় আছো একদিন তাদের পিকনিকে
 ডাক পড়বে তোমাদেরও,  হায়, ডাক পড়বে তবে, 
সেই ক্লিশে কবিতার মতো, ডাক পড়বে প্রকৃতই তোমাদেরও তবে
মদ,মাংস  খেতে নয় সুস্বাদু মাংস হিসেবে।।
 == xx ==

জনমত

কয়েকটি প্রশ্ন, একটি ভূমিকা

“বেদনা কি ‘ভাষা’য় রে …”